ভারতের চিকিৎসকরা এক ১১ বছর বয়সী একটি শিশুর মুখে আবিষ্কার করেছেন অবিশ্বাস্য ৮১টি দাঁত! বিরল এক দাঁতের রোগ ‘হাইপারডনশিয়া’–এর (Hyperdontia) কারণে এমন অস্বাভাবিকভাবে দাঁত গজিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
হাইপারডনশিয়া এমন এক বিরল অবস্থা, যেখানে স্বাভাবিক দাঁতের পাশাপাশি অতিরিক্ত দাঁত জন্ম নেয়। সাধারণত মানুষের মুখে ৩২টি স্থায়ী দাঁত থাকে, কিন্তু এই রোগে আক্রান্তদের মুখে দাঁতের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। এটি ঘটে ‘ডেন্টাল লামিনা’ নামের এক বিশেষ টিস্যুর অস্বাভাবিক কার্যকলাপের কারণে, যা দাঁত গঠনে ভূমিকা রাখে।
চিকিৎসকদের মতে, জিনগত পরিবর্তন, বিকাশজনিত ত্রুটি বা কিছু নির্দিষ্ট সিনড্রোম—যেমন গার্ডনার সিনড্রোম ও ক্লেইডোক্রানিয়াল ডিসপ্লাসিয়ার কারণে এই অতিরিক্ত দাঁত গজাতে পারে। অনেক সময় এই দাঁতগুলো মাড়ির নিচে লুকিয়ে থাকে, আবার কখনও মুখের ভেতরে দৃশ্যমান হয়।
সাধারণত অতিরিক্ত ১ থেকে ৪টি দাঁতের ঘটনা দেখা গেলেও, ৮১টি দাঁত থাকার ঘটনা অত্যন্ত বিরল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি মানুষের দাঁতের বিকাশ প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করবে।
এর আগেও ২০১৯ সালে ভারতের এক সাত বছর বয়সী শিশুর চোয়াল থেকে ৫২৬টি দাঁতের মতো গঠন অপসারণের ঘটনা বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে।
চিকিৎসকরা জানান, হাইপারডনশিয়া সনাক্ত করা হয় প্যানোরামিক এক্স-রে বা ত্রিমাত্রিক (৩ডি) স্ক্যানের মাধ্যমে। পরে সার্জারির মাধ্যমে অতিরিক্ত দাঁত অপসারণ করা হয়, যাতে মুখের ভেতর জায়গা সংকোচন, ব্যথা বা চোয়ালের বিকৃতি না ঘটে।
এই ধরনের বিরল ঘটনা গবেষকদের জন্য মানবদেহে দাঁত গঠনের প্রক্রিয়া বা টুথ মর্ফোজেনেসিস সম্পর্কে নতুন তথ্য উদঘাটনে সহায়ক হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।